Thursday, June 20, 2019

বিয়ের প্রকৃত বয়স


বিয়ে কি
এই প্রশ্নের জবাব হল ঃ সন্তান উৎপাদনের বৈধ মাধ্যমকে বিয়ে বলা হয় । মুসলিম ধর্মের পাশাপাশি প্রত্যেক ধর্মেই বিয়ের কথা বলা হয়েছে । 
সামাজিক ও শারীরিক প্রস্তুতি থাকলেই কেবল বিয়ে করাটা স্বাভাবিক । শুধুমাত্র সামাজিক প্রস্তুতি থাকলেই বা শুধুমাত্র শারীরিক প্রস্তুতি থাকলেই বিয়ের পিঁড়িতে বসা যায় না । 
বৈজ্ঞানিক থিউরি মতে, ১৮ বছর বয়স হলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়। তাই এই বয়সকে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে । এখন এই থিউরি অনুসারে যদি কেউ বিবাহ করতে চায় তাহলে তাতে বাঁধা নাই ।

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, পুরুষের ক্ষেত্রে ২১ বছর আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরকে বিয়ের বয়স হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে । 

তার মানে-  ১৮ বছরের নিচে বিয়ে মানে বাল্যবিবাহ । কিন্তু যদি কেউ ১৮ বছরের আগে সাবালিকা হতে পারে তাহলেও তার বিয়ের বয়স হয়নি । এখন যদি কারো সাবালিকা হতে ১৮ বছরের বেশী সময় লাগে ? তাহলে তার জন্য বিয়ের বয়স ঐ সাবালিকা হওয়ার পর ।

আবার কোন পুরুষ যদি ২১ বছরে সাবালক না হয় ? তাহলে যেই বয়সে সে সাবালক হবে ঐ বয়স হচ্ছে তার জন্য বিয়ের বয়স । আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২১ বছর বয়স হওয়ার আগেই সে সামাজিক এবং শারীরিকভাবে সাবালক হয়ে গেছে । তাহলে তার বিয়ের বয়স ঐ সময় যখন সে সাবালক হয় । যদিও সেটি আইন অনুযায়ী বৈধ না ।

সামজিকতা আর শারীরিকতার সাথে বিয়ের কি সম্পর্ক ?


  • বিয়ে মানে নতুন জীবন, নতুন সম্পর্ক, নতুন পরিবেশ, নতুনভাবে চলা, বাধ্যবাধকতা, ও নতুন দায়িত্ব। এই বিষয়গুলো যখন কেউ উপলব্ধি করতে পারবে, এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবে ও চলতে পারবে তখনই সে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হবে। তা না হলে অর্থাৎ এই বিষয়গুলো জানা না থাকলে বিয়ের পর এই বিষয়গুলো তার জন্য অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর এ কারণে অনেককে বিবাহ পরবর্তীতে বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনারও সম্মুখীন হতে হয়।
  • চিকিৎসকদের মতে, ১৮ বছর হওয়ার আগ পর্যন্ত মেয়েদের ইউটেরাস, ওভারি, পেলভিস পরিপক্ব হয় না। এই সময়ের মধ্যে বিয়ে হলে সন্তান নেওয়ার সময় মেয়েদের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রেও তাই। ২১ বছর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অর্গানগুলো পরিপক্ব হয় না। তবে আমি মনে করি, ৩০ বছরের মধ্যেই মানুষের বিয়ে করে, সন্তান নিয়ে ফেলা উচিত ।
তাহলে দেখা গেল যে, বিয়ের জন্য পুরুষের ২১ বছর আর মেয়েদের ১৮ বছর এটা স্থিতিশীল বয়স । 
বাল্যবিবাহ হলে বা কম বয়সে বিবাহ করলে সামাজিকভাবে অনেক সময় স্বীকৃতি লাভ করলেও পরবর্তীতে সে বিবাহের ফলাফল খুব ভাল হয় না । বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বিবাহ বিচ্ছেদের মত অঘটন ঘটে । আবার অনেক সময় দেখা গেছে কম বয়সী ছেলে মেয়েরা বিবাহের পরবর্তী দায়িত্ব পালনেও অনেক সময় ব্যর্থ হয়ে  বিবাহ বিচ্ছেদের মত অঘটন ঘটায় ।

আবার দেরীতে বিবাহ করলে তার ফলাফল সুমিষ্ট হবে সেত ভাবার কোন কারন নাই । 

মার্কিন এক গবেষণায় দেখা গেছে-  বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়,  যুক্তরাষ্ট্রে ৩২ বছরের পর বিয়ে করার কারণে প্রতি বছর ৫ শতাংশ করে বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বাড়ছে ।
যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিকোলাস এর মতে-  সাম্প্রতিক সময়ে ৩০ বা এর বেশি বয়সে বিয়ের কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
 আবার ৩২ বছর বয়সের কম বয়সে বিবাহ করার কারনে, প্রতিবছরে অন্তত ১১ শতাংশ বিবাহবিচ্ছেদের আশঙ্কা হ্রাস পেয়েছে । 
কিন্তু তার আগে এর ফলাফল ছিল বিপরীত । অর্থাৎ, যাঁরা দেরিতে বিয়ে করেন তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের হার অনেক কম ছিল।

  1. অপেক্ষাকৃত কম বয়সে বিয়ে করলে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নিতে পারে সহজে। 
  2. আর তাদের মধ্যে অহংবোধ অতটা বেশি কাজ করে না, যতটা কাজ করে ৩২ বছরের পর। 
  3. বেশি বয়সের পর বিয়ে করলে দম্পতির ভেতর বোঝাপড়াটা কম হওয়ার শঙ্কা থাকে বা মানিয়ে নেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। 
আর এ কারণেই বিচ্ছেদের হারটাও বেশি হয় বেশি বয়সের বিয়েতে।

তাহলে এখান থেকে আমরা বলতে পারি- ১৮ এর পর এবং ৩০ এর আগে বিবাহ করাটাই উত্তম । আর এর পড়ে করলে বেশী দেরি হয়ে যায় । আবার এর আগে বিয়ের পিঁড়িতে বসলে বিবাহ পরবর্তী সময়ে ঘটতে পারে বিবাহ বিচ্ছেদের মত অঘটনাও । 





________________________

No comments:

Post a Comment