Saturday, June 15, 2019

শিশুর জ্বর হলে করনীয়



শিশুর জ্বর হলে পিতামাতার চিন্তা বেড়ে যায় । তখন কি করবেন আর কি করবেন না তা নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নাই ।  কি কারনে শিশুর শরীরে জ্বর হয় তার উপর ভিত্তি করে মুলত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় ।  আসুন দেখি কি কি কারনে শিশুর শরীরে জ্বর হয় ঃ

১. ব্যাকটেরিয়াল কারনেঃ
  • মেয়ে শিশুদের ব্লাডার ইনফেকশন হয় । আনএক্সপ্লেনড ফেভার বা অজ্ঞাত জ্বর ও হতে পারে । এগুলো ব্যাকটেরিয়াল জ্বর । ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের কারনে মেয়ে শিশুদের ব্যাকটেরিয়াল জ্বর হয় । 
২. ভাইরাল ইনফেকশনের কারনেঃ
  • ঠাণ্ডা জনিত কারনে, বিভিন্ন ফ্লু এর কারনে এই ধরনের ভাইরাল জ্বর হয় । ভাইরাল জাতীয় জ্বর বা অন্যান্য কমন ভাইরাল ইনফেকশনের কারনে অল্পবয়সী শিশুদের ভাইরাল জ্বর হয় । অল্পবয়সী শিশুদের বছরে প্রায় ৭ থেকে ১১ টি ভাইরাল জ্বর হতে পারে । শিশুর পিতামাতা প্রথমে এই জ্বর লক্ষ্য করে তারপর শুরু হয় শিশুর কাশি আবার রানি নোজ বা শিশুর নাক দিয়ে তরল আসা শুরু হয় । এটি অনেকসময়  অ্যালার্জির কারনেও হয় ।
৩. নাকের সাইনাস জনিত কারনেঃ 
  • নাকের সাইনাস এটা ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা । নাকের সাইনাস ইনফেকশনের কারনেও শিশুদের শরীরে জ্বর আসে ।
৪. ভ্যাকসিন বা টিকা দেয়ার কারনেঃ
  • টিকা দানের পর প্রথম ১০-১২ ঘণ্টার মধ্যে জ্বর আসে । এই জ্বর ২-৩ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে পড়ে ভাল হয়ে যায় । শরীরে টিকা কাজ করার সময় এই জ্বর আসতে পারে । এই জ্বর আসলে বোঝা যায় যে, টিকা শরীরে কাজ করতেছে ।
৫. অতিরিক্ত তাপ বা অতিরিক্ত গরমের কারনেঃ 
  • অতিরিক্ত কাপড়ের কারনে বা তাপমাত্রা বেশী থাকলে অনেক সময় শিশুদের জ্বর আসে । 


শিশুর জ্বর হলে যা করবেন, যা করবেন না:
  • ওজন ও বয়স অনুযায়ী ইবুপ্রুফেন বা প্যারাসিটামল দিন । ওষুধের পরিমান নির্ধারণের জন্য প্যাকেটের ভিতরের পরিমাপক ব্যবহার করবেন । এভাবে না খাওয়াতে পারলে সিরিঞ্জ ও ব্যবহার করা ভাল ।
  • জ্বর থাকালে শিশুকে বিশ্রাম নিতে দিন । পরিশ্রম করলে জ্বর বেড়ে যায় ।
  • মোটা লেপ বা শীতকালীন তোশক ব্যবহার না করে হালকা কাঁথা ব্যবহার ভাল । কারন লেপের ব্যবহার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে দিতে পারে ।
  • জ্বর আসলে শিশুরা খেতে চায় না । কিন্তু কৌশলে আপনার শিশুকে খাবার খাওয়াতে হবে ।
  • যদি ট্রপিক্যাল জ্বর বা ফিভার-এর ভাইরাস দ্বারা জ্বর না হয় তাহলে ইবুপ্রফেন দেওয়া যাবে না । ট্রপিক্যাল ভাইরাস রক্তজমাটবদ্ধতার জন্য দায়ী । ইবুপ্রফেন যেমন অভ্যন্তরীণ রক্তপাত বৃদ্ধি করে ঠিক তেমনি ট্রপিক্যাল ভাইরাস জ্বর ও অভ্যন্তরীণ রক্তপাত বৃদ্ধি করে ।
  • অনেকেই নিজের সিদ্ধান্তে  অ্যাসপিরিন দেন । এটি করবেন না কারন রেই সিন্ড্রোম থাকায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র নিন ।
  • ২ মাসের কম বয়সী শিশুকে প্যানাডোল ও ইবুপ্রফেন দিবেন না । যদি ডাক্তারের অনুমতি বা ডাক্তার পরামর্শ দেন তাহলে তাহলেই কেবল দিতে পারবেন ।
  • ৬ মাসের কম বয়সী শিশুকে বুকের দুধ পান করান । মায়ের দুধ শিশুর শরীরের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি  দুধে ত্থাকা অ্যান্টিবডি ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে ।
  • ওয়ার্ম কম্প্রেসের মাধ্যমে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমানো ভাল । কপাল, কটিদেশ এবং বগলে এটি রাখুন ।
  • ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল না করিয়ে কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দেয়া ভাল । শিশুর শরীরের তাপমাত্রা কমাতে কোনধরনের এলকোহল ব্যবহার করবেন না ।
  • ডাক্তারের পরামর্শ না বোঝলে বা ওষুধের মাপ না বোঝলে ওষুধের সঙ্গে থাকা নির্দেশিকা পড়ে ওষুধের ডোজের পরিমাণ ঠিক রেখে খাওয়াতে হবে । প্রয়োজনে সময় নিয়ে ওষুধ সেবন করান ।
  • শিশুর শরীরে জ্বর থাকলে বাহিরে না নিয়া যাওয়াটাই ভাল । অনেক পিতামাতারা তাদের শিশুর জ্বর থাকাকালীন স্কুলে পাঠান । এটি মোটেও উচিৎ না । জ্বর থাকাকালীন শিশুকে স্কুলে পাঠাবেন না ।
_______________________________

No comments:

Post a Comment