স্মার্টনেছ ঠিক রাখতে, সৌন্দর্য বাড়াতে চুলের কোন বিকল্প নাই । আর তাই চুল নিয়ে এত চিন্তা আর গবেষণা । চুলের সঠিক যত্ন নিতে পারলে অনেক সময় চুল ভাল থাকে । বিভিন্ন কারনে মাথার চুল ঝরে যায় বা পড়ে যায় । চুল পড়া একটি সাধারন সমস্যা । চুল পড়া রোধ করতে আজকে কিছু টিপস বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করে এখানে পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলঃ
চুল পড়া সমস্যা দূর করতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি। অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়া শুরু হলে দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের নিকটে যান। অনেক সময় দেখা যায় যে, কোন ওষুধ সেবন করার কারনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মাথার চুল পড়ে যায়। আবার অনেক সময় বংশগতির কারনেও চুল পড়ে যেতে পারে । সকল বিষয়াদি পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞ যে পরামর্শ প্রদান করেন তা পালন করে চলতে হবে। নিজে নিজে কোন কিছু ব্যবহার করলে উপকারের চেয়ে বরং ক্ষতির পরিমান বেড়ে যেতে পারে ।
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ রয়েছে। এর মধ্যে কার্যকরী ওষুধ হচ্ছে, "ফিনাস্টেরাইড" বা "প্রপেশিয়া" যা খাওয়ার উপযোগী এবং প্রতিদিন তা গ্রহণ করতে হয়। তাছাড়া "মিনোক্সিডিল" বা "রোগেইন" বেশ জনপ্রিয় ওষুধ। চুল পড়া প্রতিরোধ করা বা পুনরায় চুল গজানোর জন্য রোগেইন বেশ কার্যকরী একটি ওষুধ। রোগেইন ফেনা তৈরিকারী এক প্রকারের ওষুধ যা দিনে দুই বার সরাসরি মাথার ত্বকে লাগাতে হয়। মাথার পেছনের অংশেএবং সামনের অংশে চুল গজানোর জন্য এটি বেশ কার্যকরী একটি ওষুধ। যথাযথ ফলাফল পাওয়ার জন্য উভয় প্রকার ওষুধ আপনাকে প্রতিদিন গ্রহণ করতে হবে। এই দুটি ওষুধ অনেকসময় পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে আবার সহায়ক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে সঠিক চিকিৎসার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা ভাল।
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার পাশাপাশি সুস্থ এবং ঘন কালো চুলের জন্য আমিষ জাতীয় বা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। চুলের বৃদ্ধির জন্য আমিষ জাতীয় খাবার খুবই প্রয়োজন। তবে চুলের পাশাপাশি শরীরের খেয়াল রাখতে হলে অবশ্যই চর্বিমুক্ত আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। মাছে প্রচুর পরিমাণ চর্বিমুক্ত আমিষ থাকে। চর্বিমুক্ত মাংস আমিষের চাহিদা পূরণ করে । বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের ভোজ্য বীজে প্রচুর ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ থাকে যা চুলে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ও পুষ্টি যোগায় চুল পড়া বন্ধ করে। কিছু কিছু মশলা, যেমন: দারুচিনি চুলের পক্ষে খুবই উপকারী। বিভিন্ন খাবারে দারুচিনি ব্যবহারের মাধ্যমে চুলের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন এবং পুষ্টির চাহিদা মেটানো যায়। তাই আমিষ জাতীয় খাবারের পাশাপাশি ভিটামিন "ই" জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে ।
চুলের আঁটসাঁট বা টান টান স্টাইল করলে শক্ত টানের ফলে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুল পড়া শুরু করে। চুলের আঁটসাঁট স্টাইল বাদ দিতে হবে। চুলের আঁটসাঁট বা টান টান স্টাইল চুলের গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত করে যার ফলে সেখানে আর চুল গজায় না। চুলের আঁটসাঁট স্টাইল করলে চুল পড়বেই এমনকি তাড়াতাড়ি তাক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। যৌবন বয়সে তেমন একটা প্রভাব না পড়লেও, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুল পড়ার হার বাড়তে থাকবে এবং পরিণামস্বরূপ মাথায় টাক পড়বে। আর তাই আজই টান টান স্টাইল বা আঁটসাঁট স্টাইল বাদ দিতে হবে ।
লেখাপড়া ছাড়াও সাংসারিক বিভিন্ন কারনে পুরুষের মানসিক চাপ বেশী থাকে । জিনগত সমস্যা ছাড়াও মানসিক চাপের কারনে যেমন চুল পড়ে যায় । ঠিক তেমনি বিভিন্ন রোগ ও পুরুষদেহে ভিটামিনের অভাবেও চুল পড়ে যায়। মাথায় টাক পড়া প্রতিরোধ করতে পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ভিটামিন নিয়মিত গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন "এ" চুলের গ্রন্থিতে রেটিনয়িক এসিডের সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ঘটাতে সাহায্য করে, ভিটামিন "বি" মানসিক চাপের মাত্রা কমিয়ে দেয়, ভিটামিন "সি", "ডি" এবং ভিটামিন "ই" পুরুষের দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে। আর তাই খাবারের পাশাপাশি ভিটামিন গ্রহণ করলে চুল পড়া বন্ধ হয়, এমনকি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে ।
পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর সুস্থ্য থাকে । চুলের শতকরা ২৫ শতাংশ গ্রন্থিই পানি দ্বারা গঠিত। আর তাই দেহে পানির অভাব দেখা দিলে চুলের গ্রন্থিগুলো দুর্বল হয়ে যায় ফলে চুলের ঘনত্ব কমে যায় এবং চুল পড়া শুরু হয়। তাছাড়া দেহে পানির অভাব দেখা দিলে নতুন চুলগ্রন্থি তৈরি হয়না ফলে নতুন চুল গজায় না। চুলের যত্নে তাই বেশী বেশী পানি পান করুন ।
জৈবিক কারন ছাড়াও অনেকে চুল পড়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা করে। ফলাফল হিসেবে চুল পড়া বেড়ে যায়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে "টেলোজেন এফ্লুভিয়াম"। "টেলোজেন এফ্লুভিয়াম"- এর ফলে মাথা থেকে নিজে নিজেই চুল পড়ে যায়, "ট্রিকোটেলোমেনিয়া" -এর ফলে বারবার চুল টানার ইচ্ছা জাগে ফলে মাথা থেকে প্রচুর পরিমাণে চুল পড়ে যায় এবং অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা-এর ফলে চুলের গ্রন্থিগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। সুতরাং মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা এড়াতে নিয়মিত বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে এবং সবার সাথে হাসিখুশিভাবে চলতে হবে ।
নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে শরীর সুস্থ থাকে, সুস্থ্য শরীরের সাধারণত চুল পড়ে না । ব্যায়ামের ফলে মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা দূরে থাকে এবং শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় । শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেলে চুলেরও বৃদ্ধি ঘটে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ।
অতিরিক্ত ধূমপান এবং মদ্যপানে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকি মানুষ মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যায় বোঝতেও পারে না । আর এই নেশা জাতীয় দ্রব্যের প্রভাব চুলের ওপরও পড়ে । গবেষণায় দেখা গেছে ধূমপান এবং মদ্যপান চুল পড়ার জন্য দায়ী। ধূমপানের ফলে শরীরের রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে চুলের গ্রন্থিগুলোতে সঠিক মাত্রায় রক্ত সঞ্চালন না থাকায় চুল পড়া শুরু হয়। অন্যদিকে মদ্যপানের ফলে শরীরে পানিশূন্যতা এবং নানানরকম পুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা দেয়। ফলে চুল পড়ে যায়। আর তাই ধূমপান, মদ্যপান বা যেকোনো নেশা জাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলতে হবে ।
পুরুষরা সাধারণত তেল খুবই কম ব্যবহার করে থাকে । আবার অনেকেই তেল ব্যবহার করলেও বলেন আমার চুল পড়ে যাচ্ছে । এক্ষেত্রে বাদামের তেল পুরুষের চুলের জন্য অত্যন্ত ভাল একটি তেল । বাদামের তেল ব্যবহার করলে একধিকে যেমন চুল পড়া বন্ধ হয় অন্যদিকে চুল পাকাও বন্ধ হয় ।
______________________
I am from India. How can I get the product.
ReplyDelete